DISCLAIMER: This photo is used only for this site. They include extracts of copyright works
copied under copyright licences. You may not copy or distribute any part of this material to any
other person. Where the material is provided to you in electronic format you may download or
print from it for your own use. You may not download or make a further copy for any other
purpose. Failure to comply with the terms of this warning may expose you to legal action for
copyright infringement or disciplinary actions as per Section 107, Copyright Act 1976.
দেখতে অনেকটাই দেশি খলশে মাছের মতো। কিন্তু আকারে এর চেয়ে খানিকটা বড়। খাল-বিল আর ডোবার পানিতে জাল ফেললেই এখন উঠে আসছে এ মাছ। স্থানীয় জলাশয়ে হঠাৎ কোথা থেকে এ মাছ এল—এটি সবার অজানা। আগ্রাসী মাছটির বংশবিস্তার বাড়াচ্ছে শঙ্কা। কারণ, এ মাছ অন্য মাছের বংশবিস্তারের জন্য হুমকি।
চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ের বিভিন্ন মাছের আড়ত আর হাট-বাজারে প্রায়ই দেখা মেলে এ মাছের। স্থানীয়ভাবে মাছটি হাইব্রিড খলশে নামে পরিচিত। দামে সস্তা হওয়ায় মাছটি নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, এই মাছের নাম ‘স্নেকস্কিন গুরামি’। তবে এটি ‘থাই গুরামি’ নামেই পরিচিত। দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওসের স্থানীয় মাছ এটি। দেশে ২০১২ সালে প্রথম মেঘনা নদীতে এটি চিহ্নিত হয়। এটি পানির কম অক্সিজেনেও টিকে থাকতে পারে। দেশে সাধারণত অ্যাকুয়ারিয়ামে এ মাছ রাখা হয়। স্থানীয় মাছের বংশবিস্তারের জন্য এ মাছ হুমকির। দ্রুত বংশবিস্তার করায় অন্য মাছের জায়গা এটি দখল করে ফেলে।
দামে কম হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে মাছটির চাহিদা বাড়ছে। গত সোমবার সকালে সরেজমিনে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া বাজার মাছের আড়তে দেখা যায়, অন্যান্য মাছের সঙ্গে নিলামে এই মাছ বিক্রি করছেন আড়তদারেরা। পাইকারিতে এক মণ মাছের দাম উঠেছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২০০ টাকা। সে হিসাবে কেজিতে দাম পড়ে মাত্র ৮০ টাকা।
উপজেলার সততা মাছের আড়তের মালিক শুকলাল দাস প্রথম আলোকে বলেন, ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ফেনীর বিভিন্ন উপজেলার মতো ফেনী নদী–সংলগ্ন মিরসরাইয়ের বেশ কিছু ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। তখন বন্যার পানির সঙ্গে এ মাছ ছড়িয়ে পড়ে। এর পর থেকে এলাকার জলাশয়ে পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারিতে প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৯০ টাকায় এ মাছ বিক্রি হয়।
দেশের অন্য মাছ রক্ষায় এটির চাষ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা উচিত। পাশাপাশি মৎস্য অধিদপ্তরেরও সতর্ক হওয়া উচিত। অ্যাকুয়ারিয়ামের জন্য মাছ আমদানির অনুমতি দেওয়ার আগে সেসব মাছের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। তা না হলে এভাবেই ধীরে ধীরে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হবে।
মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
উপজেলার মিঠাছড়া বাজারের মাছ বিক্রেতা কুমোদ জলদাশ প্রথম আলোকে বলেন, পুকুর, খাল-বিল ও ডোবা-জলাশয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় বলে এ মাছের জোগান বেশি। আবার কাটা কম থাকায় অনেকে শিশুদের জন্য এ মাছ কিনে নিচ্ছেন। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষ এ মাছের ক্রেতা। কারণ, এটিই বাজারের সবচেয়ে সস্তা মাছ।
একই মতামত স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের পূর্ব মলিয়াইশ গ্রামের বাসিন্দা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, ২০২৪ সালের বন্যার পর এখানকার ডোবা, জলাশয়, ধানের মাঠ—সব জায়গায় প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে মাছটি। জীবনী শক্তি বেশি হওয়ায় প্রতিকূল পরিবেশেও বেঁচে থাকতে পারা মাছটি গ্রাম-গঞ্জে বেশ সহজলভ্য।



